অতিরিক্ত যাত্রী ও বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ

ঈদের ছুটি শেষে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথ হয়ে কর্মস্থল রাজধানীতে ফিরছে কর্মজীবী মানুষ। ঘাটের প্রতিটি প্রবেশপথে উপচে পড়া ভিড়।

আজ শুক্রবার সকাল থেকে যাত্রীদের জনস্রোত নেমেছে ওই নৌপথে। যাত্রীদের অভিযোগ, প্রতিটি নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী ও বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কাঁঠালবাড়ি বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রীরা কিছুটা পথ হেঁটে গিয়ে নৌযানে উঠছে। লঞ্চ ও স্পিডবোটের কাউন্টারের সামনে যাত্রীরা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে। লঞ্চ ও ফেরির ছাদ থেকে শুরু করে নৌযানগুলোর প্রতিটি জায়গায় যাত্রী তোলা হচ্ছে। স্পিডবোট ঘাটের টিকিট কাউন্টারে যাত্রীদের লম্বা লাইন দেখা গেছে। ঘাটের প্রতিটি প্রবেশপথে উপচে পড়া ভিড়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা বলছে, দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যাতায়াতের জন্য কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথ ব্যবহার করে। ঈদে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে ২০টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ, দেড় শতাধিক স্পিডবোট রাখা হয়েছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তিন শতাধিক সদস্য কাজ করছেন।

মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাম হোসেনের ভাষ্য, ‘শুক্রবার থেকে ঢাকাগামী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় শুরু হয়েছে। আমরা লঞ্চ-স্পিডবোটের পাশাপাশি ফেরিতেও যাত্রী পারাপার করছি। যাত্রীদের চাপ আরও দুদিন থাকবে। তাই যাত্রী ও যানবাহনের অতিরিক্ত চাপের কথা মাথায় রেখে বিআইডব্লিউটিসি, বিআইডব্লিউটিএ, পুলিশ, র‍্যাব, আনসার, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করছেন।’

মাদারীপুর থেকে ঢাকাগামী যাত্রী অপূর্ব রায় বলেন, ‘পরিবহনে যেমন ভিড়, লঞ্চেও তেমন। গাদাগাদি করে নৌযানে উঠতে হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় বেশিসংখ্যক যাত্রী মনে হচ্ছে একেকটি লঞ্চে। তবুও লঞ্চে উঠতে পেরে ভালো লাগছে। তবে দুর্ঘটনার ভয় থেকেই যায়।’

ঢাকাগামী আরেক যাত্রী কায়সার ব্যাপারী বলেন, ‘সকালের দিকে আবহাওয়া স্বাভাবিক। সে জন্য সকালের দিকেই আমি আমার পরিবার নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করি। লঞ্চে বেশি চাপ। তাই নদীপথে পারাপার করা সবার জন্য ঝুঁকি।’

ঢাকাগামী যাত্রী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘লঞ্চে আগে টিকিট কাটতে হয় না। মাঝ পদ্মায় গিয়ে টিকিট কাটতে হয়। ৩০ টাকার ভাড়া ঈদের কথা বলে ৪০ টাকা আদায় করছে। স্পিডবোটে ১২০ টাকার ভাড়া যাত্রীদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে তুলছে। স্পিডবোটে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হয় বিধায় লঞ্চে উঠেছি।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কাঁঠালবাড়ি লঞ্চঘাটের ট্রাফিক পরিদর্শক আক্তার হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকেই যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে ঘাটে। বেশির ভাগ যাত্রীই লঞ্চে পদ্মা পার হচ্ছে। অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হচ্ছে না। ধারণক্ষমতার বাইরে আমরা কোনো যাত্রী তুলতে দিই না। নৌপথের লঞ্চগুলো সতর্কতার সঙ্গে যাত্রী পার করছে।’

কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) কুশল কুমার সাহা বলেন, ‘ঘাট এলাকায় যাত্রীদের চাপ চোখে পড়ার মতো। তাই যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে ঘাট এলাকায় আমাদের পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।’

শিবচর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান আহম্মেদ বলেন, ‘ঘাট এলাকায় ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। এ জন্য নৌযানগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তায় ঘাট এলাকায় আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট সব সময় দায়িত্বপালন করছেন।’